বাংলায় ত্রিমাত্রিক
-শুভময় ভট্টাচার্য্য
আসুন কিছু সাধারন প্রশ্নের মাধ্যমে 3D ব্যাপারটা জানা যাক।
ত্রিমাত্রিক দৃষ্টি (3D Vision) কি ?
3D মানে হল এমন এক বস্তু, যার তিনটি দিক আছে। সাধারনত আমরা দুচোখ দিয়ে সবকিছুই 3D বা ত্রিমাত্রিক দেখি কারন মানব মস্তিষ্ক ত্রিমাত্রিক দৃষ্টি উপলব্ধিতে সক্ষম।
আমাদের প্রত্ত্যেকটি চোখ আলাদা আলাদা এক একটি দিমাত্রিক ছবি মস্তিষ্কে পাঠায়, মানব মস্তিষ্ক সেই দুটি আলাদা দিমাত্রিক ছবি থেকে 3D বা ত্রিমাত্রিক উপলব্ধি সৃষ্টি করে। আমাদের এই ক্ষমতার জন্যই আমরা দৃশ্যমান বস্তুর গভিরতা, দুই বা একাধিক বস্তুর মধ্যে দুরত্ত সঠিক ভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
আমাদের প্রত্ত্যেকটি চোখ আলাদা আলাদা এক একটি দিমাত্রিক ছবি মস্তিষ্কে পাঠায়, মানব মস্তিষ্ক সেই দুটি আলাদা দিমাত্রিক ছবি থেকে 3D বা ত্রিমাত্রিক উপলব্ধি সৃষ্টি করে। আমাদের এই ক্ষমতার জন্যই আমরা দৃশ্যমান বস্তুর গভিরতা, দুই বা একাধিক বস্তুর মধ্যে দুরত্ত সঠিক ভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
এই দিমাত্রিক উপলব্ধি সব মানুষের সমান থাকেনা, এমনকি দুটি চোখ থাকা সত্তেও অনেকে এই দিমাত্রিক উপলব্ধি থেকে বঞ্চিত।
এই দিমাত্রিক উপলব্ধির জন্যে দুটি সক্ষম চোখ ছাড়াও মানুষের আরো কিছু ক্ষমতার প্রয়োজন।
ত্রিমাত্রিক দৃষ্টি (Stereoscopic vision)> দুটি চোখের সামান্য আলাদা ছবি দেখার সক্ষমতা। দুটি ছবি তুলনা করলে দেখা যায়, দুরের বস্তুর থেকে কাছের বস্তুর অবস্থান বেশি আলাদা। কোনো বস্তুতে দৃষ্টি স্থির রেখে ক্রমান্ন্যয়ে এক একটি চোখ বন্ধ করলেই ছবি দুটির পার্থক্য উপলব্ধি করা সম্ভব।
দুরত্তমাত্রিক দৃষ্টি (Accommodation:) দৃষ্ট বস্তু চোখ থকে দুরত্ত অনুযায়ী দুটি চোখের মণির (focus of Lenses) অবস্থান পরিবর্তন ক্ষমতা। যেমন কাছের বস্তু দেখার জন্যে দুটি চোখের মণির পারষ্পারিক দুরত্ত কমে যায়। আবার দুরের বস্তু দেখার জন্যে উহাদের দৃষ্টি সমান্তরাল থাকে।
লম্বন দৃষ্টি (Parallax:) আমরা যখন পাশাপাশি দিকে মাথা ঘোরাই বা কোনো গাড়ি করে যাই তখন কাছের বস্তু দুরের বস্তুর থেকে অনেক বেশি পরিমানে অবস্থান পরিবর্তন করে বলে বোধ হয়। ইহা উপলব্ধি করার ক্ষমতাকেই লম্বন দৃষ্টি বলা হয়।
আকার উপলব্ধি (Size familiarity:) কোনো বস্তুর আকার সমন্ধে সম্যক ধারনা থাকলে, সেই বস্তুটি ঠিক কত দুরত্তে অবস্থিত তা আন্দাজ করা সম্ভব। দুটি এক ই আকারের বস্তু যদি একে অন্যের থেকে বড় দেখায় তাহলে সহজেই বলা সম্ভব যে বড় দৃষ্যমান বস্তুটি কাছে অবস্থিত।
উচ্চ দৃষ্টরূপ (Aerial perspective) আলোক রশ্মি বায়ুর মধ্যে এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে যায়, দুরত্তে অবস্থিত বস্তু নিকটবর্তী বস্তুর চেয়ে কম বৈসাদৃশ্য রাখতে আবির্ভূত হয়। দুরত্তে অবস্থিত বস্তু কম বিক্ষীপ্ত রঙের (color-saturated) আবির্ভূত হয় এবং পটভূমির মত একটি হাল্কা রঙের আভাস থাকে (সাধারণত নীল)।
উপরে আলোচিত ক্ষমতার জন্যে মানুষ সবকিছুই ত্রিমাত্রিক (3D) উপলব্ধি করতে পারে।
চলচ্চিত্র থিয়েটারে(Cinema Hall) বা টিভি (TV) তে ত্রিমাত্রিক (3D) দেখব কি করে ?
একটি চলচ্চিত্র থিয়েটারে ত্রিমাত্রিক (3D) দেখার জন্য আপনি একটি 3D Glass পরিধান করেন যাতে আপনার দুটি চোখ আলাদা আলাদা চিত্র মস্তিষ্কে জোগান দিতে পারে। পর্দা দুটি চিত্র প্রকৃতপক্ষে প্রদর্শন করে, এবং 3D Glass একটি চোখে একটি চিত্র ও অন্য চোখে আর একটি চিত্র প্রদান করে, আমাদের মস্তিস্ক এর থেকে ত্রিমাত্রিক উপলব্ধি সৃষ্টি করে। এই ধরনের চলচ্চিত্রে দুটি ক্যামেরা বা দুটি লেন্সযুক্ত একটি কামেরা ব্যাবহার করা হয় যাতে ত্রিমাত্রিক দৃষ্টির (Stereoscopic vision) মতন একই চিত্রের জন্যে দুটি সামান্য আলাদা ছবি রেকর্ড করা যায়।
এই ত্রিমাত্রিক (3D) দেখার জন্য তিনটি সাধারণ সিস্টেমটি আছে :
১> অ্যানালাইফ সিস্টেম (Anaglyph System)
২> পোলারাইজড সিস্টেম (Polarized System)
৩> শাটার সিস্টেম (Shutter System)
Red/Green অথবা Green/Magenta 3D Glass , টেলিভিশনে 3D প্রভাবের জন্য এখন প্রধানত ব্যবহার করা হয়, এবং অনেক পুরনো 3D চলচ্চিত্রে থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই সিস্টেমে, দুটি চিত্র একসাথে দেখানো হয়। দুইটি চি্ত্রের একটি নীলে অন্যটি লাল প্রদর্শন করা হয় (অথবা একটি সবুজ অন্যটি রানি)। 3D Red/Green (অথবা Green/Magenta Glass) ফিল্টার প্রত্যেক ঢোখেতে আলাদা আলাদা কিন্ত একটি করে চিত্র অনুমোদন করে, এবং মস্তিষ্ক এর থেকে ত্রিমাত্রিক উপলব্ধি সৃষ্টি করে।
দুরত্তমাত্রিক দৃষ্টি (Accommodation:) দৃষ্ট বস্তু চোখ থকে দুরত্ত অনুযায়ী দুটি চোখের মণির (focus of Lenses) অবস্থান পরিবর্তন ক্ষমতা। যেমন কাছের বস্তু দেখার জন্যে দুটি চোখের মণির পারষ্পারিক দুরত্ত কমে যায়। আবার দুরের বস্তু দেখার জন্যে উহাদের দৃষ্টি সমান্তরাল থাকে।
লম্বন দৃষ্টি (Parallax:) আমরা যখন পাশাপাশি দিকে মাথা ঘোরাই বা কোনো গাড়ি করে যাই তখন কাছের বস্তু দুরের বস্তুর থেকে অনেক বেশি পরিমানে অবস্থান পরিবর্তন করে বলে বোধ হয়। ইহা উপলব্ধি করার ক্ষমতাকেই লম্বন দৃষ্টি বলা হয়।
আকার উপলব্ধি (Size familiarity:) কোনো বস্তুর আকার সমন্ধে সম্যক ধারনা থাকলে, সেই বস্তুটি ঠিক কত দুরত্তে অবস্থিত তা আন্দাজ করা সম্ভব। দুটি এক ই আকারের বস্তু যদি একে অন্যের থেকে বড় দেখায় তাহলে সহজেই বলা সম্ভব যে বড় দৃষ্যমান বস্তুটি কাছে অবস্থিত।
উচ্চ দৃষ্টরূপ (Aerial perspective) আলোক রশ্মি বায়ুর মধ্যে এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে যায়, দুরত্তে অবস্থিত বস্তু নিকটবর্তী বস্তুর চেয়ে কম বৈসাদৃশ্য রাখতে আবির্ভূত হয়। দুরত্তে অবস্থিত বস্তু কম বিক্ষীপ্ত রঙের (color-saturated) আবির্ভূত হয় এবং পটভূমির মত একটি হাল্কা রঙের আভাস থাকে (সাধারণত নীল)।
উপরে আলোচিত ক্ষমতার জন্যে মানুষ সবকিছুই ত্রিমাত্রিক (3D) উপলব্ধি করতে পারে।
একটি চলচ্চিত্র থিয়েটারে ত্রিমাত্রিক (3D) দেখার জন্য আপনি একটি 3D Glass পরিধান করেন যাতে আপনার দুটি চোখ আলাদা আলাদা চিত্র মস্তিষ্কে জোগান দিতে পারে। পর্দা দুটি চিত্র প্রকৃতপক্ষে প্রদর্শন করে, এবং 3D Glass একটি চোখে একটি চিত্র ও অন্য চোখে আর একটি চিত্র প্রদান করে, আমাদের মস্তিস্ক এর থেকে ত্রিমাত্রিক উপলব্ধি সৃষ্টি করে। এই ধরনের চলচ্চিত্রে দুটি ক্যামেরা বা দুটি লেন্সযুক্ত একটি কামেরা ব্যাবহার করা হয় যাতে ত্রিমাত্রিক দৃষ্টির (Stereoscopic vision) মতন একই চিত্রের জন্যে দুটি সামান্য আলাদা ছবি রেকর্ড করা যায়।
এই ত্রিমাত্রিক (3D) দেখার জন্য তিনটি সাধারণ সিস্টেমটি আছে :
১> অ্যানালাইফ সিস্টেম (Anaglyph System)
২> পোলারাইজড সিস্টেম (Polarized System)
৩> শাটার সিস্টেম (Shutter System)
অ্যানালাইফ সিস্টেম (Anaglyph System)
এই সিস্টেম যেকোনো LCV TV বা LCD Monitor এ ত্রিমাত্রিক (3D) দেখা সম্ভব।
এর জন্যে কোনো ত্রিমাত্রিক (3D) সুবিধাযুক্ত টেলিভিশন বা ডিভিডি প্লেয়ার এর প্রয়োজন হয়না।
এই সিস্টেম সাধারন মানুষের আয়ত্তের মধ্যে এবং মাত্র ১৫০ টাকার এই সিস্টেম বাড়িতে পাওয়া সম্ভব।
কলকাতায় 3D KOLKATA নামে একটি সংস্থা এই সুবিধা প্রদান করে।
বিস্তারিত জানতে ৯০৩৮০৯০৪০৪/৪৪৪ নম্বরে ফোন করতে পারেন বা http://3dkol.blogspot.com/ ওয়েবসাইট টি দেখতে পারেন।
পোলারাইজড সিস্টেম (Polarized System)
এই সিস্টেম টি বর্তমানে সমগ্র চলচ্চিত্র থিয়েটারে ব্যবহৃত হয়। এটি অ্যানালাইফ সিস্টেমেরই একটি অত্যাধুনিক সংস্করন। সাম্প্রতিক কালে, প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে সমবর্তনের (Polarization) সাহায্যে বাণিজ্যিক ভাবে ত্রিমাত্রিক (3D) চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা সম্ভব হয়েছে। এই সিস্টেমে আলোক সমবর্তনের (Polarization) একটি বৈশিষ্ট্য ও ডিজিট্যাল প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়। এই প্রযুক্তিটিতে চিত্র প্রক্ষেপ করতে আলোর সমবর্তন (Polarization) ব্যবহার করে দুটি আলাদা প্রজেক্টর এর মাধ্যমে একই পর্দায় দুই চিত্রের প্রক্ষেপ করা হয়, প্রত্যেক চিত্রের ভিন্ন্য সমবর্তন থাকে । চোখে একটি পোলারাইজড 3D Glass পরতে হর যেটাতে বিপরীত সমবর্তন রয়েছে এবং এটি প্রত্যেক চোখে দুটি চিত্রকে আলাদা আলাদা করে পরিবেশন করে। একই নিয়মে মস্তিষ্কে ত্রিমাত্রিক(3D) উপলব্ধি সৃষ্টি হয়।
এই সিস্টেমে অ্যানালাইফ সিস্টেমের মতন চিত্রের বর্ণবিভ্রাটের সম্ভবনা থাকেনা। তবে সাধারন ভাবে এই সিস্টেম সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে, বাণিজ্যিক ভাবে বৃহৎ সংখক দর্শকের জন্যেই এই ব্যবস্থা করা হয়। Zalman নামে একটি সংস্থা এই সিস্টেম ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে সাধারন মানুষকে পরিবেশন করতে চলেছে, যা ভারতে এখনো উপলব্ধ নয়।
শাটার সিস্টেম (Shutter System)
বর্তমানে শাটার সিস্টেম একটি খুব জনপ্রিয় পছন্দ। এই প্রযুক্তিটি বর্তমান HDTV তে ত্রিমাতৃক (3D) প্রদর্শন করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। সাধারনত টেলিভিশনে বা প্রজেক্টরে ৬০ হার্জের একটি ন্যুনতম হারে চিত্র প্রদর্শিত হয়। এই সিস্টেমে টেলিভিশনে বা প্রজেক্টরে ১২০ হার্জের একটি ন্যুনতম হার ব্যবহৃত হয় যাতে প্রত্যেকটি চোখের চিত্রের জন্যে ৬০ হার্জের একটি ন্যুনতম হার ধার্য করা থাকে। এই ধরনের টেলিভিশনে বা প্রজেক্টরে ত্রিমাতৃক চলচিত্রের দুটি চিত্র একটির পর আর একটি ক্রমান্নয়ে প্রদর্শন করা হয়। প্রত্যেকটি চিত্র ৬০ হার্জের একটি ন্যুনতম হারে এর হিসেবে মোট ১২০ হার্জের ব্যবহার হয়। এক্ষেত্রে চোখে একটি সক্রিয় শাটার 3D Glass পরতে হয় যেটাতে দুটি LCD কাঁচ থাকে। ভোল্টেজ প্রয়োগে এই কাঁচ গুলিকে ক্রমান্নয়ে স্বচ্ছ অথবা অন্ধকার করে হয় যাতে বৈকল্পিকভাবে (Alternatively) প্রত্যেকটি কাঁচ চোখে ৬০ হার্জের একটি ন্যুনতম হারে আলো প্রতিরোধ করে। এর ফলে যখন একটি চিত্রের ক্রমগুলি একটি মাত্র চোখে দৃশ্যমান হয়, অপর চোখের কাঁচ তখন আলো প্রতিরোধ করে একই ভাবে দ্বিতীয় চিত্রের ক্রমগুলি অন্য চোখেই দৃশ্যমান হয় ও প্রথম চোখের কাঁচ তখন আলো প্রতিরোধ করে।
প্রত্যেকটি চোখে আলাদা আলাদা কিন্ত একটি করে চিত্র দৃশ্যমান হয়, এবং মস্তিস্ক এর থেকে ত্রিমাত্রিক উপলব্ধি সৃষ্টি করে।
এই সিস্টেমের টেলিভিশন এর মুল্য লক্ষ্য টাকার বেশি এবং শাটার 3D Glass গুলিও ৮-১০ হাজার টাকার বিনিময়ে পাওয়া যায়।
প্রত্যেকটি চোখে আলাদা আলাদা কিন্ত একটি করে চিত্র দৃশ্যমান হয়, এবং মস্তিস্ক এর থেকে ত্রিমাত্রিক উপলব্ধি সৃষ্টি করে।
এই সিস্টেমের টেলিভিশন এর মুল্য লক্ষ্য টাকার বেশি এবং শাটার 3D Glass গুলিও ৮-১০ হাজার টাকার বিনিময়ে পাওয়া যায়।
- শুভময় ভট্টাচার্য্য
No comments:
Post a Comment